উদাসীন সেচ দপ্তর : সেচ খালের পাড় দখল করে দেদার তৈরী হচ্ছে পাকা বাড়ি

23rd February 2021 10:18 pm বর্ধমান
উদাসীন সেচ দপ্তর : সেচ খালের পাড় দখল করে দেদার তৈরী হচ্ছে পাকা বাড়ি


প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ও পার্থ ব‍্যানার্জী ( বর্ধমান ) :  প্রশাসনের কর্তারা ভোটের কাজ নিয়ে ব্যস্ত।  তার সুযোগ নিয়ে সেচ দপ্তরের কর্তাদের কার্যত বুড়ো আঙুল দেখিয়েই সেচ খালের পাড়ের জমি দখল করে দেদার তৈরি হচ্ছে পাকা বাড়ি।পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের কৃষ্ণচন্দ্রপুর এলাকায় ওই সব বাড়ি কেনও ভূমিহীন পরিবারের লোকজন করছেন এমনটা নয় ।সেচ খালের পাড়ে ওইসব বাড়িগুলি তৈরি করছেন কৃষ্ণচন্দ্রপুর এলাকারই বিত্তশালী পরিবারের লোকজন। তা নিয়ে এলাকার চাষি মহলে ব্যাপক ক্ষোভ বিক্ষোভ ছড়িয়েছে।সেচ খালের পাড় দখল করে তৈরি হওয়া পাকা বাড়ি গুলি ভেঙে গুড়িয়ে দেওয়ার ব্যাপারে এলাকার চাষিরা সেচ দপ্তরের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন ।  জামালপুরের মেমারি-তারকেশ্বর রোডে হালাড়া থেকে চৌবেড়িয়া পর্যন্ত দীর্ঘ রাস্তার  একপাশ দিয়ে বয়ে গিয়েছে সেচ খাল। ওই সেচখালের জলেই বিস্তির্ণ এলাকার চাষ জমি , বিশেষত তিন ফসলি জমিতে চাষাবাদ করেন চাষিরা।সেচ খালের পাড় ধসে পড়া আটকাতে সেখানে প্রচুর গাছ লাগানো আছে । কৃষ্ণচন্দ্রপুর এলাকার চাষিদের অভিযোগ আগে সেচ খালের পাড়ের দখল নিয়ে সেখানে সারা বছর বালি মজুত করে রাখতো বালি কারবারিরা ।তার কারনে পাইপের সাহায্যে রাস্তার বিপরিত দিকের জমিতে সেচের জল নিয়ে যেতে পারতেন না চাষিরা ।এছাড়াও  সেচ খালের পাড়ে মজুত  রাখা বালি সেচ খালে গড়িয়ে পড়ে খালের গভীরতা অনেক কমেও গিয়েছে ।এখন সেচ খালের পাড়ে বালি মজুত রাখা বন্ধ  হলেও শুরু হয়েছে সেচ খালের পাড় দখল করে একের পর এক পাকা বাড়ি তৈরির কাজ ।এলাকার  চাষিরা মঙ্গলবার বলেন , যারা বাড়ি গুলি তৈরি করছেন তারা কেউ ভূমিহীন পরিবারের লোকজন নন । সবাই বড় ব্যবসায়ী ও ধনী  পরিবারের সদস্য । কৃষ্ণচন্দ্রপুর এলাকায় সেচখালের পাড়ে থাকা গাছ গুলিও সন্তর্পণণে কেটে দেওয়া  হয়েছে ।তারপর থেকে শুরু হয়েছে পাড়  দখল করে দেদার  পাকা বাড়ি তৈরি।চাষিরা জানিয়েছেন,যে ভাবে সেচ খালের পাড় দখল করে বাড়ি তৈরি হচ্ছে তার ফলে জমিতে সেচের জল পাওয়ার ক্ষেত্রে আগামী দিনে চাষিদের চুড়ান্ত সমস্যায় পড়তে হবে । জামালপুর ১ পঞ্চায়েতের প্রাক্তন উপ প্রধান  অলোক ঘোষ  বলেন , বছর তিনেক আগে সারাংপুর এলাকার এক বালি কারবারী সারাংপুরে  সেচ খালের জায়গা দখল করে বেআইনি ভাবে পাকা  বাড়ি তৈরি করছিলেন । সেচ দপ্তরের কর্তারা পুলিশের সাহয্য নিয়ে বুলডোজার চালিয়ে সেই বাড়ি গুড়িয়ে দিয়েছিলেন ।চাষি স্বার্থে  কৃষ্ণচন্দ্রপুর এলাকায় সেচ খালের পাড় দখল করে যেসব পাকা বাড়ি গুলি তৈরি হচ্ছে সেই গুলিও সেচ দপ্তর গুঁড়িয়ে দিক ।নয়তো এলাকার চাষিরা যে ভাবে ক্ষোভে ফুঁষছে  তারা যে কোন দিন এই বিষয়টি নিয়ে  বৃহত্তর আন্দোলন শুরু করে দিতে পারে’ ।  সেচ দপ্তর অবৈধ নির্মান বন্ধে কি ব্যবস্থা নিচ্ছে তা জানতে এদিন জামালপুর সেচ দপ্তরের  সাব ডিভিশনাল অফিসার দীনেশ ঠিকাদারকে একাধীক বার ফেন করেও যোগাযোগ করা যায়নি । ঘটনাস্থল থেকে দেড় কিমি দূরে জামালপুরের সেচ দপ্তরের অফিসে  গিয়েও কোন আধিকারিকের দেখা পাওয়া যায়নি ।তবে একজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার(লোয়ার দামোদর ইরিগেশন সার্কেল) তপন পাল কে ঘটনা সবিস্তার জানানো হলে তিনি বলে , “এই বিষয়ে কিছু জানা নেই । খোঁজ নিয়ে দেখছি ।বেআইনি ভাবে সেচ দপ্তরের জায়গা দখল করে যারা পাকা বাড়ি তৈরি করছেন তাদের বিরুদ্ধে যথা যথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে । ”

ছবি : মহঃ খান

 





Others News

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা


প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) : প্রায় এক বছর আগে আবেদন করেও মেয়ের জাতিগত শংসাপত্র মেলেনি । আবেদনকারীদের জাতি শংসাপত্র দেওয়ার
ক্ষেত্রে দেরি করা যাবেনা বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।কিন্তু বাস্তবে ঠিক তার উল্টোটাই ঘটে চলেছে।প্রায় এক বছর আগে  চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে  আবেদন করেছিলেন মা।কিন্তু মেয়ে কে পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসলেও জাতি  শংসাপত্র আজও না মেলায় কার্যত হতাশ হয়ে পড়েছেন পূর্ব বর্ধমানের মেমারির রাধাকান্তপুর নিবাসী ঊর্মিলা দাস।ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য ঊর্মিলাদেবী বৃহস্পতি বার মেমারি ১ ব্লক বিডিও অফিসে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন। শংসাপত্র পাবার জন্য বিডিও সাহেব কি ব্যবস্থা করেন সেদিকেই এখন তাকিয়ে ঊর্মিলাদেবী। 

বিডিওকে লিখিত আবেদনে ঊর্মিলাদেবী জানিয়েছেন ,তাঁর স্বামী মানিক দাস দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধী ।বছর ১০ বয়সী তাঁদের একমাত্র কন্যা গ্রামের বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত কালে তাঁর ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য তিনি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারী আবেদন করেছিলেন।  উর্মিলাদেবী বলেন ,তার পর থেকে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে  গেলেও তিনি তাঁর মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পান না।মেয়ের পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসায় গত অক্টোবর মাসের শেষের দিকে তিনি শংসাপত্রের বিষয়ে মেমারি ১ ব্লকের বিডিও অফিসে খোঁজ নিতে যান।জাতি শংসাপত্র বিষয়ের বায়িত্বে থাকা বিডিও অফিসের আধিকারিক তাঁকে অনলাইনে এই সংক্রান্ত একটি নথি বের করে আনতে বলেন । অনলাইনে সেই নথি বের করেনিয়ে তিনি ফের ওই আধিকারিকের কাছে যান । তা দেখার পর ওই আধিকারিক তাঁকে  ২০ দিন বাদে আসতে বলেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন , তিনি ২৫ দিন বাদে যাবার পর ওই আধিকারিক তাঁকে গোপগন্তার ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়ে খোঁজ নেবার কথা বলেন । তিনি এরপর গ্রামপঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যান । নথি ঘেঁটে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে কোন ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি।ঊর্মিলাদেবী দাবী করেন ,এই ভাবে তিনি একবার বিডিও অফিস , আবার পঞ্চায়েত অফিসে দরবার করে চলেন । কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছু হয় না। মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য  গত ১৩ ডিসেম্বর ফের তিনি বিডিও অফিসে যান ।ওই দিনও বিডিও অফিসের জাতি শংসাপত্র বিষয়ক বিভাগের আধিকারিক তাঁকে একই ভাবে পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যেতে বলে দায় সারেন। পরদিন তিনি পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে গেলে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ ফের জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে  ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি । কেন মেয়ের জাতি শংসাপত্র পাচ্ছেন না সেই বিষয়ে  না পঞ্চায়েত না ব্লক প্রশাসনের কর্তৃপক্ষ কেউই তাঁকে কিছু জানাতে পারেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন ,পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির আগে তার মেয়ে যাতে ওবিসি শংসাপত্র পেয়ে যায় তার ব্যবস্থা করার জন্য এদিন তিনি বিডিওর কাছে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন । মেমারী ১ ব্লকের বিডিও আলী মহম্মদ ওলি উল্লাহ এদিন বলেন ,“জাতি শংসাপত্র পাবার জন্য হাজার হাজার আবেদন জমা পড়ছে । তবে ঊর্মিলাদেবীর কন্যা দ্রুত যাতে বিবিসি শংসাপত্র দ্রুথ পান সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে “। মেমারির বিধায়ক মধুসূদন ভট্টাচার্য্য বলেন,’মেমারি  বিধানসভা এলাকার আবেদনকারীরা দ্রুত যাতে জাতি শংসাপত্র পান সেই বিষয়ে প্রশাসনকে আরও তৎপর হওয়ার কথা বলবো’।